ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

দেড়শ বছরের অধিক মেয়াদে সাজার সম্মুখীন হতে হবে সু চিকে

বার্মিজ সেনাবাহিনীর বিতর্কিত অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গৃহবন্দি থাকা মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে দুর্নীতির আরও একটি অভিযোগ এনেছে দেশটির সামরিক সরকার। এর মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে ১১তম দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের করা হলো। সবগুলো অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে নোবেলজয়ী এই নেত্রীকে দেড়শ বছরের অধিক মেয়াদে সাজার সম্মুখীন হতে হবে।


শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, মিয়ানমার নেত্রী সু চির বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত দুর্নীতির মোট ১১টি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর প্রতিটিতে পৃথকভাবে ১৫ বছর করে কারাদণ্ড হতে পারে তার। আর সেটি বাস্তবায়িত হলে সু চির মোট সাজার মেয়াদ ১৫০ বছর ছাড়িয়ে যেতে পারে।


এর আগে গত জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে সু চির বিরুদ্ধে দুর্নীতির আরও ৫টি অভিযোগ এনেছিল জান্তা সরকার। সে সময় জানানো হয়েছিল, এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রতিটির জন্য ১৫ বছর করে কারাভোগ করতে হবে তাকে।


মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ইনফরমেশন টিম বিবৃতির মাধ্যমে জানিয়েছে, নিজের মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত একটি চ্যারিটি ফাউন্ডেশনের জন্য পাঁচ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার অনুদান গ্রহণ করেছিলেন সু চি। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) পুলিশ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে।


অবশ্য বৃহস্পতিবার ওই অভিযোগ আনা হলেও এর বিচারিক কার্যক্রম ঠিক কবে নাগাদ শুরু হতে পারে সেটি ওই বিবৃতিতে জানানো হয়নি।


আরও পড়ুন : রুশ-মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র সমঝোতার সম্ভাব্য ইঙ্গিত ফাঁস


বিশ্লেষকদের মতে, শান্তিতে নোবেলজয়ী ৭৬ বছর বয়সী সু চির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে এরই মধ্যে প্রায় এক ডজন মামলা করেছে দেশটির জাতীয় ক্ষমতায় আসীন জান্তা। রাজধানী নেইপিদোর জান্তা নিয়ন্ত্রিত আদালতেই সেসব মামলার বিচারকাজ চলছে। সব মামলায় যদি সু চি দোষী সাব্যস্ত হন, সেক্ষেত্রে তাকে দেড়শ বছরেরও বেশি সময় কারাগারে কাটাতে হবে। সু চি অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগকে পুরোপুরি মিথ্যা বলে দাবি করেছেন।


এর আগে বার্মিজ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে উসকানি দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি এবং কোভিড-১৯ প্রোটোকল লঙ্ঘনের মাধ্যমে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ভাঙার দায়ে গত বছরের ৬ ডিসেম্বর সু চিকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন দেশটির একটি আদালত। সরকারের শীর্ষ পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ১১ মাসের মাথায় তার বিরুদ্ধে দেওয়া প্রথম কোনো মামলার রায় ছিল সেটি।


মূলত এরপর সু চির বিরুদ্ধে এই রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। সে সময় আদালত সু চিকে চার বছরের কারাদণ্ড দিলেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনার মুখে পরে সেটি দুই বছর কমিয়ে দেয় জান্তা সরকার।


এরপর অবৈধ ওয়াকিটকি বহনসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে জানুয়ারি মাসের ১০ তারিখে অং সান সু চিকে আরও চার বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত তিনি ৬ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন।

ads

Our Facebook Page